Thursday, April 14, 2016
দেহে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ দেয় ফাস্ট ফুড
পরেরবার বারগারের সঙ্গে যদি ফ্রেঞ্চ ফ্রাই অর্ডার করে থাকেন, তবে দেহে বাড়তি রাসায়নিক পদার্থ যোগ করছেন আপনি। নতুন এক গবেষণায় বলা হয়, যারা বেশি বেশি ফাস্ট ফুড খেয়ে থাকেন তাদের দেহে অন্যদের চেয়ে বেশি ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ থাকে।
আমেরিকার সেন্টারস ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনস-এর ন্যাশনাল হেলথ অ্যান্ড নিউট্রিশন এক্সামিনেশন সার্ভে থেকে ৮৮৭৭ জন অংশগ্রহণকারীর তথ্য নেন গবেষকরা। এদের সবার বয়স ৬ বছর। এদের এক-তৃতীয়াংশ গত ২৪ ঘণ্টায় ফাস্ট ফুড বা প্রক্রিয়াজাত খাবার খায়। এদের মূত্রের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। যারা ফাস্ট ফুড খেয়েছিল তাদের নমুনায় প্যাথালেটস, ডিইএইচপি এবং ডিআইএনপি পাওয়া যায়।
জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির মিলকেন ইনস্টিটিউট স্কুল অব পাবলিক হেলথের প্রফেসর অ্যামি জোটা জানান, আমরা একদিনের নমুনা সংগ্রহ করেছি। কারণ মানুষের দেহে এসব রাসায়নিক পদার্থের অর্ধেক পরিমাণ খুব বেশি সময় থাকে না। তবে মূত্রের ফলাফল বিগত ২৪ ঘণ্টার অবস্থা প্রকাশ করে।
এ গবেষণার ফলাফল জনগণের স্বাস্থ্যের চিত্র প্রকাশ করতে পারে। যারা ফাস্ট ফুড খায় এবং যারা খায় না, দুই দলের দেহে রাসায়নিক পদার্থের পরিমাণের পার্থক্য প্রায় ২০-৪০ শতাংশ পর্যন্ত হয়।
এর আগেও অন্যান্য গবেষণায় বলা হয়েছে, প্যাথেলেটস এমন এক উপাদান যা শিল্প-কারখানায় ব্যবহৃত হয়। ফাস্ট ফুড তৈরিতে এটি ব্যবহৃত হয়।
জোটা বলেন, বেশি খাবার খেলেই এমনটা হয় না। ফাস্ট ফুড খেলেই ফলাফল এমনটা আসে। রেস্টুরেন্টে যেকোন খাবার খেলে একই ফলাফল পাওয়া যায়। কিন্তু ফাস্ট ফুডের ক্ষেত্রে বিষয়টি ভিন্ন।
গবেষণায় দেখা গেছে, ব্রেড, কেক, পিৎজা, ভাতের বিভিন্ন ডিশ এবং নুডলসসহ মাংস প্যাথালেট বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। শস্যদানার ক্ষেত্রে এ বিষয়টি বেশ অবাক করেছে গবেষকদের। তবে বিশেষ করে প্রাণীজ খাবার প্যাথালেট বৃদ্ধির মূল হোতা। কারণটা হলো, প্যাথালেটগুলো ফ্যাট পছন্দ করে।
প্রতিদিনের অন্যান্য ব্যবহৃত পণ্যেও প্যাথালেটের দেখা মেলে। শ্যাম্পু বা অ্যাডহেসিভ ইত্যাদিতেও এটি থাকে। সিডিসি'র মতে, মানুষের দেহে প্যাথালেট কতটা ক্রিয়াশীল থাকে তা বুঝতে আরো বেশি গবেষণা প্রয়োজন।
খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ পদ্ধতিতেই খাবারে প্যাথালেট মিশে যেতে পারে। যেমন- টিউবের মাধ্যমে দুধ প্রবাহ করে যেসব দুগ্ধজাত খাবার তৈরি হয়, তাতে প্যাথালেট পাওয়া যায়। গ্রিস বা তাপমাত্রার কারণে গ্লাভস থেকে খাবারে চলে যায় প্যাথালেট।
প্যাথালেটের ক্রনিক আক্রমণের কারণে বেশ কিছু স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে গর্ভকালীন নারীদের নানা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। পুরুষের শুক্রাণুর উর্বরতা নষ্ট করতে পারে। শিশুদের কোনো কিছু শেখা এবং আচরণকগত বৈশিষ্ট্য সৃষ্টির সময় সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া স্থূলতার মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা হওয়া বিচিত্র কিছু নয়।
খাবারে প্লাস্টিকের প্যাকেট তৈরিতে বিপিএ নামে এক ধরনের উপাদান ব্যবহৃত হয়। গবেষকরা জানান, ফাস্ট ফুড যারা খায় তাদের দেহে বিপিএ পাওয়া গেছে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, প্যাথালেটের ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে হলে ফাস্ট ফুড গ্রহণ কমাতে হবে। জনস্বাস্থ্যের লক্ষ্য অর্জন করতে হলে ফাস্ট ফুড থেকে দূরে থাকার অভ্যাস গড়ে তুলতে পরামর্শ দেন বিজ্ঞানীরা। সূত্র : ফক্স নিউজ
সৌজন্যে- কালের কণ্ঠ অনলাইন
Subscribe to:
Post Comments (Atom)

No comments:
Post a Comment