কেউ নিয়মিত আবার কেউ বা মাঝে মধ্যে গ্যাসট্রিক বা গ্যাস্ট্রাইটিসের সমস্যায় ভোগেন৷ কেন এই সমস্যা হয় এবং খাওয়ার পর গ্যাস বা অম্বলকে কীভাবে এড়ানো যায় – তারই কিছু সহজ উপায় থাকছে এই ছবিঘরে৷
তিন বেলার খাবার ছয় বেলায় খান
আপনি তিন বেলার খাবারকে
ভাগ করে ছয়বার খান৷
তেলে ভাজা খাবার, অতিরিক্ত
ঝাল, চর্বি, মসলা, মিষ্টি,
অর্থাৎ যেসব খাবার হজম
করতে সমস্যা হয়, সেগুলো
খাবার তালিকা থেকে আস্তে
আস্তে কমিয়ে দিয়ে হালকা
খাবার খান৷ যেমন আপনার
খাবারের তালিকায় থাকতে পারে মাছ,
অল্প মাংস, সবজি, আলু
ইত্যাদি৷ এছাড়া খালি পেটে
ফলের রস বা টক
জাতীয় খাবার একেবারেই নয়৷
খাবার উপভোগ করুন
পরিমাণে অল্প খাবার একটু
ধীরে ধীরে ভালো করে
চিবিয়ে খান৷ দুপুরে খাওয়ার
পর পরই ঘুমানো উচিত
নয়, কারণ এতে খাবার
আবার পাকস্থলীতে ফিরে আসতে পারে৷
বরং হাতে সময় থাকলে
খাবার পর একটু হাঁটা
যেতে পারে, যা খাবার
হজম এবং মলত্যাগে সহায়তা
করে থাকে৷
বুঝে পান করুন
পিপাসা মেটাতে পানি এবং
হালকা চা পান করতে
পারেন৷ তবে দিনে কম
পক্ষে দুই লিটার পানি
পান করা উচিত, যাতে
খাবার পাকস্থলীতে ভালো করে মিশে
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে পারে৷
কফি বা অ্যালকোহল যতটা
সম্ভব কম পান করলেই
ভালো৷ তবে শুধু খাবার
নয়, জল পান করার
দিকেও কিছুটা গুরুত্ব দিতে
হবে৷
ঢিলেঢালা পোশাক
খুব টাইট জিন্স বা
কোমরের বেল্ট বেশি টাইট
করে বাঁধবেন না৷ কারণ টাইট
বেল্ট পেটে চাপ দেয়,
যার ফলে টক ঢেকুর
উঠতে পারে৷ কাজেই একটু
আরামদায়ক বা একটু ঢিলে
কাপড়-চোপড় পরাই স্রেয়৷
নিয়মিত হাঁটাচলা করুন
‘হাঁটা-চলার কোনো বিকল্প
নেই’ – এ কথা কম-বেশি আমরা সকলেই
জানি৷ অতিরিক্ত ওজনের কারণে পেটে
চাপ পড়ে এবং হাঁটাচলা
না করায় মলত্যাগ করার
পথে বাঁধা সৃষ্টি হয়৷
তাছাড়া পেটে খাবার জমে
থাকা মানেই অস্বস্তি বোধ
এবং সে কারণে ওজন
কমানো বা ওজন ঠিক
রাখাও সম্ভব হয় না৷
ব্যায়াম এবং হাঁটাচলা করলে
শরীর থাকে হালকা থাকে,
অন্ত্রও থাকে সক্রিয় আর
গ্যাসও হয় কম৷
বালিশটা একটু উঁচু করে ঘুমাবেন
গ্যাসট্রিক বা অম্বলের সমস্যা
সাধারণত রাতে বেলায় হয়৷
তাই বালিশটা একটু উঁচু করে
এবং শরীরের ওপরের দিকটাও
একটু উঁচুতে তুলে ঘুমাবেন৷
এতে গ্যাসট্রিক অ্যাসিড ওপরে উঠতে পারে
না৷ বাঁদিকে কাত হয়ে ঘুমালেও
পেটে চাপ কম পড়ে৷
তাছাড়া রাতের খাবার ঘুমাতে
যাওয়ার তিন ঘণ্টা আগে
খেলে খাবার হজম করতে
আর কোনো সমস্যা হয়
না৷
আঁশযুক্ত খাবার
ডাক্তারি ভাষায় টক খাবার
বলতে বোঝায় মুরগির মাংস,
মাছ, ভাত, মসুরের ডাল
ইত্যাদি৷ এ ধরনের খাবার
খাওয়ার পর অ্যাসিড হতে
পারে৷ তাই আলু, রুটি,
সিম, মটরশুটি, মুগের ডাল, কলাইয়ের
ডাল ইত্যাদি খাবার ‘টক’ খাবারের
সাথে মিশিয়ে খেলে অম্বলের
সম্ভাবনা অনেক কমে যায়৷
এছাড়া প্রতিদিন খাবারের তালিকায় সামান্য আলু সেদ্ধ বা
আলুর তরকারি থাকতে পারে৷
আঁশযুক্ত খাবারের কথা অবশ্যই মাথায়
রাখতে হবে৷
স্ট্রেসকে দূরে রাখুন
‘‘স্ট্রেস বা মানসিক চাপের
সাথে রয়েছে পেটের ঘনিষ্ঠ
সম্পর্ক৷ তাই যে কোনো
সংঘাত এড়িয়ে যতটা সম্ভব
‘স্ট্রেস’ থেকে নিজেকে মুক্ত
রাখার চেষ্টা করুন৷ হালকা
খাবার, যথেষ্ট হাঁটাচলা, কিছুটা
বিশ্রাম – এভাবেই পেট বা
অন্ত্রকে রক্ষা করতে, গ্যাসট্রিককে
প্রতিরোধ করতে পারেন৷’’ এ
পরামর্শ কোলনের ইন্টারনাল মেডিসিনের
বিশেষজ্ঞ ডা. ইয়োর্গেন স্ল্যুইটারের৷
গ্যাসট্রিককে জয় করুন
হাঁপানি, হৃদরোগ, জন্ম নিরোধ ট্যাবলেট বা ব্যথার ওষুধ সেবন থেকেও অম্বল বা গ্যাসট্রিক হতে পারে৷ তাই যাঁরা এরকম ওষুধ সেবন করেন তাদের গ্যাসট্রিকের সমস্যা দেখা দিলে সেকথা সরাসরি ডাক্তারকে বলুন৷ কখনো অম্বল হয়নি এমন মানষ খুঁজে পাওয়া কঠিন৷ কারুর হঠাৎ করে এ সমস্যা দেখা গেলে, বুঝতে হবে যে হয় অতিরিক্ত খাওয়া বা দেরিতে খাওয়া বা ভুল খাওয়ার কারণে এমনটা হয়েছে৷

No comments:
Post a Comment