Saturday, May 14, 2016

সার্ভিকাল ক্যান্সার: লজ্জা নয়, আছে প্রতিরোধের উপায়


মালিহার বিয়ের প্রায় বছর খানেক হয়েছে। হঠাৎ একদিন সে খেয়াল করলো, এক সপ্তাহ পরপরই তার মাসিকের মতো রক্তক্ষরণ হচ্ছে। শুধু তাই নয়, রক্তক্ষরণের মাত্রাও অনেক বেশি আর সেই সঙ্গে কেমন একটা দুর্গন্ধ। মালিহা লজ্জায় কাউকে কিছু বলতে পারে না। এরপর শুরু হলো আরেক বিপদ। স্বামীর সঙ্গে যৌন মিলনে অসম্ভব ব্যাথা আর রক্তক্ষরণ হতে লাগলো। স্বামীই জোর করে তাকে নিয়ে যায় ডাক্তারের কাছে। পরীক্ষায় দেখা যায় সার্ভিকাল (জরায়ুমুখ) ক্যান্সারে আক্রান্ত মালিহা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে প্রতি বছর বাংলাদেশে সার্ভিকাল ক্যান্সারে মারা যায় প্রায় ৬,৫০০-এরও বেশি নারী। কিন্তু আশ্চর্য এদেশে সার্ভিকাল ক্যান্সার নিয়ে এখনও তেমন জনসচেতনতা তৈরি হয়নি। এর প্রধান কারণ সামাজিক সংস্কার এবং সংকোচ। বাংলাদেশে মেন্সট্রুয়েশন কিংবা যৌনাঙ্গ নিয়ে আলোচনা এখনও ট্যাবু। এনিয়ে প্রকাশ্যে তো নয়ই আপনজনের মাঝেও আলোচনা হয়না। যে কারণে মেয়েরা অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ, দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব, যৌনক্রিয়ার সময় ব্যাথা অথবা মেনোপজের পর আবার রক্তক্ষরণ - এ ধরনের বিষয়গুলো ‘ঠিক হয়ে যাবে’ মনোভাব নিয়ে চেপে রাখে। অবশেষে যখন সার্ভিকাল অনেক খারাপ পর্যায়ে পৌঁছে অথবা দেহের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে যায়, তখন ডাক্তারের কাছে গেলেও তেমন কিছু করার থাকে না।

অন্যান্য ক্যান্সারের সাথে সার্ভিকাল ক্যান্সারের অন্যতম পার্থক্য হলো টিকার মাধ্যমে এই ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব। সার্ভিকাল ক্যান্সারের জন্য দায়ী হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস নামক একধরণের ভাইরাস। টিকার মাধ্যমে এই ভাইরাসের সবচেয়ে কমন স্ট্রেইন গুলির বিরুদ্ধে শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়। ফলে সার্ভিকাল ক্যান্সার থেকে অনেকখানি সুরক্ষা পাওয়া যায়। । তাই কিশোর বয়সে বিয়ের আগেই এই টিকা দেয়া উচিত। তবে বিয়ের পরেও অথবা বয়স ২৫ বা ৩৫ হলেও এ টিকা দেয়া যায়, তবে সেক্ষেত্রে টিকা দেবার আগে আপনার শরীরে ইতিমধ্যেই এই জীবাণু আছে কিনা পরীক্ষা করে নিতে হবে। প্রথমবার তিন ডোজ টিকা নেবার পর সাধারণত প্রতি ৫ বছর পরপর পুনরায় এ টিকা নিতে হয় যেন টিকার কার্যক্ষমতা বজায় থাকে।

টিকা ছাড়াও সার্ভিকাল ক্যান্সার থেকে বাচার উপায় হল নিয়মিত স্ক্রিনিং। স্ক্রিনিং এর ফলে এই ক্যান্সার প্রথম দিকে ধরা যায়, ফলে সহজে চিকিৎসা করা সম্ভব হয়। সারভাইকাল ক্যানসারের স্ক্রিনিং এর জন্য ৩০ বছর বয়স থেকে (অথবা বিয়ের পাঁচ বছর পূর্ণ হবার পর থেকে) প্রতি তিন বছর পর পর নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা করানো উচিত। বাংলাদেশে বেশিরভাগ সরকারী হাসপাতালে বিনামূল্যে এই স্ক্রিনিং করা হয়। তবে ৬৫ বছরের পর এই ক্যানসারের ঝুঁকি কমে যায়, সুতরাং তখন আর নিয়মিত এই স্ক্রিনিং করানোর প্রয়োজন নেই।

আর সার্ভিকাল ক্যান্সার হয়ে গেলে এর চিকিৎসা সম্ভব। আক্রান্ত রোগীরা হিস্টেরেকটমি বা জরায়ুতে অস্ত্রোপচার অথবা কেমো আর রেডিও থেরাপি নিয়ে সুস্থ হতে পারবেন।

সবার আগে দরকার অহেতুক লজ্জা ও ভয় দূর করা। প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ ভালো, তাই না?

ক্রেডিট

Friday, May 13, 2016

নখ দেখে বুঝে নিন কোন অসুখে আক্রান্ত হতে চলেছেন

সব কিছুরই কোনও না কোনও পূর্ব লক্ষণ থাকে। যেমন ভালোবাসার লক্ষণ দেখলেই চেনা যায়, তেমনই রোগের লক্ষণও বোঝা যায়। কিন্তু কবে আপনার অসুখ হবে, সেটা আপনি বুঝতে পারবেন, এমনটা কিন্তু নয়। আপনি নিজের হাতের নখ দেখলেই বুঝতে পারবেন, খুব তাড়াতাড়ি আপনি কোন অসুখে আক্রান্ত হতে চলেছেন।

দেখে নিন নখের কোন কোন লক্ষণে কোন কোন রোগ লুকিয়ে রয়েছে:-
১) কারও নখ সাদা ধবধবে হয়, আবার কারও নখ লালচে হয়। লালচে নখ মানে, আপনার রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বেশি রয়েছে। আর সাদা নখ মানে, রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম। অর্থাৎ আপনি অ্যানিমিয়ায় ভুগছেন। এ রকম অবস্থায় যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিন, আর সঠিক চিকিৎসা করান।
২) কখনও কখনও আমাদের নখ দেখা যায় হলুদ হয়ে যাচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা মনে করি যে, সেটা খাবারের রঙের কারণে হচ্ছে। আসলে কিন্তু তা নয়। আপনার জন্ডিস হওয়ার প্রথম লক্ষণ এটাই। অবহেলা একদম করবেন না।
৩) নেলপলিশ পরার কারণে আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নখের দিকে বিশেষ নজর দিই না। যদি কখনও দেখেন আপনার নখ কালো হয়ে যাচ্ছে, তার মানে এটি স্কিন ক্যানন্সারের লক্ষণ।
৪) অনেকেরই নখের মাঝে সাদা দাগ দেখা যায়। এর অর্থ, আপনার শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। সূত্র: জি নিউজ


জেনে নিন কাত হয়ে ঘুমানোর উপকারিতা


একেক মানুষ একেকভাবে শুয়ে থাকতে বা ঘুমাতে পছন্দ করেন। বিছানায় বুক দিয়ে বা পিঠ দিয়ে শোয়ার অভ্যাস গড়ে ওঠে অধিকাংশ মানুষের। তবে এক গবেষণায় বলা হয়েছে, যেকোনো এক দিকে কাত হয়ে শোয়া স্বাস্থ্যের জন্যে অনেক বেশি উপাকারী। মস্তিষ্কের বর্জ্য দূর হয় এতে। শুধু তাই নয়, এতে আলঝেইমার, পারকিনসন এবং অন্যান্য নিউরোলজিক্যাল রোগের ঝুঁকি কমে আসে।

মস্তিষ্কের একটি অংশ দ্রবীভূত ক্ষতিকর পানি ও রাসায়নিক পদার্থ পরিষ্কার করে। জটিল এই অংশকে বলা হয় গ্লিমফ্যাটিক পাথওয়ে। বিশেষজ্ঞরা এমআরআই প্রক্রিয়ায় এই অংশের কার্যক্রম পরীক্ষা করেন।

দেখা গেছে, এক কাত হয়ে শোয়ার সময় মস্তিষ্কের গ্লিমফ্যাটিক পাথওয়ে সবচেয়ে বেশি ময়লা পরিষ্কার করে থাকে। মস্তিষ্কের এসব বর্জ্য আলঝেইমারসহ অন্যান্য নিউরোলজিক্যাল রোগ সৃষ্টির ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।

ইঁদুরের মস্তিষ্কের গ্লিমফ্যাটিক পাথওয়ের কার্যক্রম পরীক্ষা করতে কয়েক বছর ধরে এমআরআই করে যাচ্ছেন। দেখা গেছে, সেরেব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড (সিএসএফ) মস্তিষ্কে ফিল্টার হয় এবং ইন্টারস্টিশিয়াল ফ্লুইডের (আইএসএফ) সঙ্গে সমন্বয় করে মস্তিষ্কের বর্জ্য পরিষ্কার করে।

কাত হয়ে শোয়ার ফলে গ্লিমফ্যাটিক পাথওয়ে সর্বাধিক সক্রিয় থাকে। বর্জ্য পদার্থে রয়েছে অ্যামইলয়িড বেটা এবং টাও প্রোটিন। এগুলো এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ যা মস্তিষ্কের বিকাশের পথে বাধা সৃষ্টি করে।

জার্নাল অব নিউরোসায়েন্সে প্রকাশিত নতুন এই গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, ইঁদুরকে উপুর করে বা বুকের ওপর, চিত করে বা পিঠের ওপর এবং এক কাত করে শুইয়ে মস্তিষ্কের এমআরআই করা হয়। তিন অবস্থার মধ্যে কাত হয়ে শোয়ার সময় গ্লিমফ্যাটিক পাথওয়ে কাজ করতে থাকে সবচেয়ে বেশি। এ তথ্য দেন স্টোনি ব্রুক ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের অ্যানেস্থেসিয়োলজি অ্যান্ড রেডিওলজি বিভাগের প্রফেসর হেলেন বেনভেনিস্তে।

হেলেন এবং তার সহকর্মী অ্যানেস্থেসিয়োলজি অ্যান্ড রেডিওলজি বিভাগের সহকারী প্রফেসর হেডক লি শোয়ার সবচেয়ে নিরাপদ ভঙ্গির বিষয়টি পরীক্ষা করেন। এ ছাড়া ইউনিভার্সিটি অব রোচেস্টারের বিশেষজ্ঞ লুলু জি, রাশিদ ডিয়ানে এবং মাইকেন নেডারগার্ড এমআরআই ডেটা সংগ্রহ করেন ফ্লুয়োরেন্সেস মাইক্রোস্কপি এবং রেডিওঅ্যাক্টিভ ট্রেসারের মাধ্যমে। মজার বিষয় হলো, প্রকৃতিতে প্রাণীরা মস্তিষ্কের যত্নে কাত হয়ে শোয়াতেই অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে। বহু প্রাণী কাত হয়ে শুয়ে থাকে। আবার মানুষের মধ্যেও কাত হয়ে শোয়ার প্রবণতা বেশি।

এ পরীক্ষায় পরিষ্কার হয় যে, শোয়াল ভঙ্গি দেহের জৈবিক প্রক্রিয়ায় প্রভাববিস্তার করে। গভীর ও স্বাস্থ্যকর ঘুমের জন্যে তাই শোয়ার সঠিক অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এ কারণেই ঘুমের ব্যাঘাতের কারণে স্মৃতিশক্তি নষ্ট হওয়া বা আলঝেইমার রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।

স্টোনি ব্রুক, ইউনিভার্সিটি অব রোচেস্টার এংব নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা এ গবেষণাকর্মে অংশ নেন। সূত্র : ফিউচারিটি

ক্রেডিট

Thursday, May 12, 2016

ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও দেহের বাড়তি ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে যে দুটি ফল


ডায়াবেটিস ও হৃদরোগীরা এবার হয়ত রোগ নিয়ন্ত্রণের একটি উপায় খুঁজে পাবেন। কারণ সম্প্রতি গবেষকরা জানিয়েছেন, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও দেহের বাড়তি ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে লাল আঙ্গুর ও কমলার মিশ্রণ। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।

সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ওয়ারউইকের গবেষকরা লাল আঙ্গুর ও কমলার এ রোগ নিরাময় ক্ষমতার সন্ধান পেয়েছেন। এ দুটি ফল একত্রে দেহের স্থূলতা নিয়ন্ত্রণ, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখতে পারে। এ বিষয়ে গবেষকদের প্রধান পল থর্নালে। তিনি জানান, এটি খুবই অসাধারণ ও রোমাঞ্চকরী আবিষ্কার। আর এতে স্থূলতা, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ক্রমবর্ধমান এ রোগ নিয়ন্ত্রণ এখন বহু দেশের জন্যই চ্যালেঞ্জের বিষয়। আর এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ভূমিকা রাখতে পারবে এ দুটি ফল।

কী রয়েছে আঙ্গুর ও কমলায়, যার কারণে নিয়ন্ত্রণে থাকবে হৃদরোগ ও ডায়াবেটিস? গবেষকরা জানান, তারা দেখতে পেয়েছেন, এ দুটি ফল একত্রিত করলে সেখানে ট্রান্স-রেসভেরেটর নামে একটি কম্পাউন্ডের উদ্ভব হয়। এ কম্পাউন্ড রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে। এছাড়া সার্বিকভাবে হৃদরোগেরও নিয়ন্ত্রণ করে এটি।

এ গবেষণার জন্য ৩২ জন স্থূল ব্যক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যাদের বয়স ছিল ১৮ থেকে ৮০ বছর। তাদের বিএমআই ছিল ২৫ থেকে ৪০-এর মধ্যে। তাদের এ দুটি ফলের মিশ্রণ দিয়ে ফলাফল লিপিবদ্ধ করেন গবেষকরা। গবেষক পল থর্নালে ও তার টিম এখন আশা করছেন আঙ্গুর ও কমলার উপাদানগুলো ব্যবহার করে কার্যকর ওষুধ তৈরি করা সম্ভব হবে, যে ওষুধ ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও স্থূলতা দূর করতে সহায়তা করবে। এ বিষয়ে গবেষকদের প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে ডায়াবেটিস জার্নালে।


সৌজন্যে- কালের কণ্ঠ অনলাইন

Wednesday, May 11, 2016

পেটের মেদ কমবে যেভাবে


পেটে মেদ মানেই বিব্রতকর পরিস্থিতি! শারীরিক পরিশ্রম না করা এবং অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাসের কারণেই পেটের ভেতরে এই চর্বির স্তর জমা হয়৷ নিয়মিত ঘণ্টা ধরে ব্যায়াম করার সময় হয়তো আপনার হাতে নেই; তবে দৈনন্দিন জীবনযাপনে ছোটখাটো কিছু পরিবর্তনই পেটের এই মেদ কমাতে সাহায্য করতে পারে৷
পারসোনা হেলথের প্রধান প্রশিক্ষক ফারজানা খানম কয়েকটি টিপস দিলেন এ ব্যাপারে-
১. নিয়মিত খাবার অল্প অল্প করে খেতে হবে৷ অর্থাৎ একবারে বেশি খাবার খাওয়া যাবে না৷ প্রতিদিনের খাবারের তালিকা ভাগ করে নিতে হবে পাঁচ বা ছয় ভাগে৷
২. খাওয়ার আগে পান করতে হবে দুই গ্লাস পানি। খাবার খাওয়ার সময় পানি খাওয়া একেবারেই ঠিক নয়৷ পানি যদি খেতেই হয় তবে তা খাওয়ার আধঘণ্টা পরে খাওয়াই ভালো৷
৩. পেটে মেদ জমতে দিতে না চাইলে রাতের খাবার ঘুমানোর দুই ঘণ্টা আগে খেতে হবে৷ এ ছাড়াও যেদিন বেশি ক্যালরি বা চর্বিজাতীয় খাবার খাওয়া হবে, সেদিন এক কাপ হালকা গরম পানিতে লেবুপানি মিশিয়ে পান করে নিন৷
৪. এসব মেনে চলার পাশাপাশি নিয়মিত হাঁটাও পেটের মধ্যে মেদ জমতে বাধা দেয়৷ সে জন্য সময় করে যে হাঁটতেই হবে, তা নয়৷ বরং অফিস থেকে ফেরার পথে ২০ মিনিটের মতো পথ জোরে জোরে হাঁটুন৷ সিঁড়ির ব্যবহারও পেটের মেদ কমাতে সাহায্য করে৷ প্রতিদিন একবার পাঁচ বা ছয়তলা সিঁড়ি হেঁটেই উঠুন৷
৫. বাসাতে থাকলে মেঝেতে শুয়ে হালকা কিছু ব্যায়ামও করতে পারেন৷ যেমন: মেঝেতে সোজা হয়ে শুয়ে পড়ুন৷ দুই পায়ের মধ্যে একটু ফাঁকা রেখে হাঁটু পর্যন্ত ভেঙে নিন৷ হাত দুটো কানের পেছনে থাকবে৷ এবার নিশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে মাথাটা ওপরে ওঠান৷ ঘাড় সোজা থাকবে এবং চোখ দুটো থাকবে ওপরের দিকে৷ খেয়াল রাখবেন, ঘাড়ে যেন চাপ না পড়ে৷ পেটের মাংসপেশিতে ‘ভাইব্রেন্ট’ হচ্ছে কি না, সেদিকেও খেয়াল রাখুন৷ এভাবে শ্বাস নিতে নিতে মাথাটা নামিয়ে ফেলুন৷ নামানোর সময় মাথা মেঝে থেকে ওপরে থাকবে৷ একইভাবে এক থেকে ১২ পর্যন্ত গুনতে গুনতে মাথা ওঠা-নামা করুন মনে রাখবেন, খুব দ্রুত গতিতে এটি করতে হবে৷ এভাবে প্রথম পর্যায়ে ১২ বার করলেই চলবে৷ আস্তে আস্তে অভ্যাস হয়ে গেলে বাড়িয়ে নিন এই ব্যায়ামের সময়৷ দেখবেন, ১৫ দিনেই কতটা ফিট হয়েছেন আপনি!

Tuesday, May 10, 2016

আপনার কিডনি কি ভালো আছে? বুঝে নিন সহজ দুই পরীক্ষায়?

কিডনি কখন যে বিগড়োবে, আগাম কোনও লক্ষণ দেখে বোঝার বা চেনার উপায় নেই। যে কারণে রোগ ধরতে ধরতেই অনেক দেরি হয়ে যায়। যাদের কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কোনোরকম আশঙ্কা রয়েছে, মানে, কেউ যদি ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপের রোগী হয়ে থাকেন বা কারও পরিবারে কিডনির অসুখ থেকে থাকে বা যাঁদের বয়স ৬০ পেরিয়েছে, তাঁদের উচিত বছরে অন্তত দু-বার দুটো পরীক্ষা করানো। ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশন জানাচ্ছে, ACR ও GFR-এর মতো দুটো সিম্পল টেস্ট করালেই ধরা পড়ে যাবে আপনার কিডনি ঠিকঠাক কাজ করছে কি না।

আপনার কিডনি কি ভালো আছে? বুঝে নিন সহজ দুই পরীক্ষায়?

কিডনি কখন যে বিগড়োবে, আগাম কোনও লক্ষণ দেখে বোঝার বা চেনার উপায় নেই। যে কারণে রোগ ধরতে ধরতেই অনেক দেরি হয়ে যায়। যাদের কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কোনোরকম আশঙ্কা রয়েছে, মানে, কেউ যদি ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপের রোগী হয়ে থাকেন বা কারও পরিবারে কিডনির অসুখ থেকে থাকে বা যাঁদের বয়স ৬০ পেরিয়েছে, তাঁদের উচিত বছরে অন্তত দু-বার দুটো পরীক্ষা করানো। ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশন জানাচ্ছে, ACR ও GFR-এর মতো দুটো সিম্পল টেস্ট করালেই ধরা পড়ে যাবে আপনার কিডনি ঠিকঠাক কাজ করছে কি না।

১. মূত্র পরীক্ষা বা ACR ACR :- হল অ্যালবুমিন ও ক্রিয়েটিনিনের অনুপাত। অ্যালবুমিন হল বিশেষ ধরনের প্রোটিন। মূত্রে অ্যালবুমিন আছে কি না, পরীক্ষা করে সেটাই দেখা হয়। আমাদের শরীরের জন্য প্রোটিন অত্যন্ত জরুরি। যে কারণে রক্তে প্রোটিন থাকা খুব স্বাভাবিক। কিন্তু, এই প্রোটিন কখনোই মূত্রে থাকার কথা নয়। যদি মূত্র পরীক্ষায় প্রোটিন পাওয়া যায়, তার মানে হল, কিডনি ঠিকঠাক ভাবে রক্তকে ছাঁকতে পারছে না। তাই ইউরিন টেস্টে প্রোটিন পজিটিভ হলে, নিশ্চিত হতে তাঁর NFR করাতে হবে। যদি, তিন মাস বা তার বেশি সময় ধরে রেজাল্ট পজিটিভ হয়, তা কিডনি অসুখের লক্ষণ।

২. GFR কাউন্ট করতে রক্ত পরীক্ষা :- কিডনি খারাপ হলে, তা রক্ত থেকে ক্রিয়েটিনিন অর্থাত্‍‌ বর্জ্য পদার্থ ঠিকমতো বের করে দিতে পারে না। তবে, এই ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা হল প্রথম ধাপ। এর পর গ্লোমেরুলার ফিলট্রেশন রেট বা GFR দেখতে হবে। সেই রেজাল্ট দেখেই ডাক্তার বুঝতে পারবেন আপনির কিডনি কেমন কাজ করছে। কিডনি নিয়ে তাই কোনোরকম ভয় হলে, অযথা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত না হয়ে, এই পরীক্ষাগুলো করে নিতে পারেন।

Sunday, May 8, 2016

মাইগ্রেন সমস্যা? ভালো থাকার ৫ উপায় জেনে নিন



মাইগ্রেনের কারণে বহু মানুষই মারাত্মক সমস্যার মুখোমুখি হন। এ সমস্যার কারণে বিশ্বের বহু মানুষই প্রচণ্ড মাথাব্যথাসহ নানা ধরনের ভোগান্তিতে পড়েন। মাইগ্রেনের সমস্যায় আবহাওয়া পরিবর্তন, খাবার, সুগন্ধ ইত্যাদিতেও কষ্ট পেতে হয় তাদের অনেককে। আর মাইগ্রেন কিভাবে আক্রমণ করবে তা অনেকে বুঝতেও পারেন না। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। মাইগ্রেন বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা কোনো সহজ কাজ নয়। কিছু উপায় অবলম্বনে মাইগ্রেনের রোগীরা ভালো থাকতে পারেন। এ লেখায় দেওয়া হলোতেমন কিছু উপায়।
১. আপনার যদি সুগন্ধী দ্রব্যে সমস্যা হয় তাহলে সুগন্ধী দ্রব্য থেকে দূরে থাকুন। এক্ষেত্রে রুম ফ্রেশনার, সুগন্ধী মোমবাতি, শক্তিশালী ডিটারজেন্ট পাউডার কিংবা গন্ধ সৃষ্টিকারী যে কোনো দ্রব্য এড়িয়ে চলুন।
২. কিছু খাবার মাইগ্রেনের ব্যথার জন্য দায়ী হতে পারে। এক্ষেত্রে সাবধানে থাকতে হবে পনির, বাদাম, লেবুজাতীয় ফল, চকলেট, আচার ও মেরিনেটেড খাবার, সীম, কিশমিশ, চা-কফির মতো ক্যাফেইনযুক্ত খাবার ও অ্যালকোহল থেকে। এ ধরনের খাবার খাওয়ার পর যদি মাইগ্রেনের সমস্যা হয় তাহলে তা এড়িয়ে চলতে হবে।
৩. মাসিক চক্রের কারণে অনেক নারীর মাইগ্রেনের ব্যথা হতে পারে। সাধারণত এটি অল্প সময়ের জন্য হয়। এক্ষেত্রে ওষুধ গ্রহণ করলে কার্যকরভাবে ব্যথা কমানো যায়।
৪. মানসিক চাপের কারণে বহু মানুষেরই মাইগ্রেনের মতো সমস্যা হতে পারে। এক্ষেত্রে মানসিক চাপ কমানোর জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
৫. অনিয়মিত ঘুম চক্রের কারণে মাইগ্রেনের ব্যথা হতে পারে। এক্ষেত্রে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানো ও ঘুম থেকে ওঠা অভ্যাস করলে মাইগ্রেনের সমস্যা দূর হতে পারে।

সৌজন্যে-  কালের কণ্ঠ অনলাইন

Thursday, May 5, 2016

তৈলাক্ত খাবার হৃদরোগের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ : ডা: দেবি শেঠি !!


পোষ্ট টি মন দিয়ে পড়বেন আপনারই উপকার হবে
আর পোষ্ট টি শেয়ার করে অন্যদের কে উপকার করবেন ।
দেবি শেঠি ভারতের বিখ্যাত চিকিৎসক। বলা হয়, বিশ্বের সেরা ১০ জন সার্জনের একজন তিনি।বাংলাদেশেও তিনি বেশ পরিচিত। ভারতের কর্নাটক রাজ্যের ব্যাঙ্গালোর থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে শেঠির নারায়ণা হৃদয়ালয় হাসপাতালটি বিশ্বের অন্যতম প্রধান হাসপাতাল।
প্রশ্ন: হৃদরোগ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ নয় এমন মানুষেরা কিভাবে হৃদযন্ত্রের যত্ন নিতে পারে?
দেবি শেঠি: ১. খাবারের বিষয়ে সচেতন হতে হবে। শর্করা এবং চর্বিজাত খাবার কম খেতে হবে। আর আমিষের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে।
২. সপ্তাহে অন্তত পাঁচদিন আধা ঘণ্টা করে হাঁটতে হবে। লিফটে চড়া এড়াতে হবে। একটানা বেশি সময় বসে থাকা যাবে না।
৩. ধূমপান ত্যাগ করতে হবে।
৪. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
৫. রক্তচাপ এবং সুগারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
প্রশ্ন: শাক জাতীয় নয়, এমন খাবার (যেমন মাছ) খাওয়া কি হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী?
দেবি শেঠি: না।
প্রশ্ন: মাঝে মাঝে শোনা যায় সুস্থ মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছে যা খুবই দুঃখজনক। এ বিষয়টি আপনি কিভাবে দেখেন?
দেবি শেঠি: এটাকে বলে নীরব আক্রমণ। এজন্যই ত্রিশোর্ধ্ব সকলের উচিত নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা।
প্রশ্ন: মানুষ কি উত্তরাধিকারসূত্রে হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারে?
দেবি শেঠি: হ্যাঁ।
প্রশ্ন: হৃদযন্ত্রের ওপর চাপ পড়ে কেন? এর থেকে উত্তরণের উপায় কি?
দেবি শেঠি: জীবনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করতে হবে। জীবনে সব কিছু নিখুঁত হবে এমন ভাবার কোনো কারণ নেই।
প্রশ্ন: জগিং করার চেয়ে কি হাঁটা ভারেঅ? নাকি হৃদযন্ত্রের যত্ন নেয়ার জন্য আরো কঠিন ব্যায়াম জরুরি?
দেবি শেঠি: হ্যাঁ, জগিং করার চেয়ে হাঁটা ভালো। জগিং করলে মানুষ দ্রুত ক্লান্ত হয়ে যায় এবং জয়েন্টে ব্যথা হয়।
প্রশ্ন: দরিদ্র এবং অভাবগ্রস্তদের জন্য আপনি অনেক কিছু করেছেন। এসবের পেছনে অনুপ্রেরণা কি ছিল?
দেবি শেঠি: মাদার তেরেসা। তিনি আমার রোগী ছিলেন।
প্রশ্ন: নিম্ন রক্তচাপে যারা ভোগেন, তারা কি হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারে?
দেবি শেঠি: সেটা হবে খুবই বিরল।
প্রশ্ন: কোলেস্টেরলের মাত্রা কি অল্প বয়স থেকেই বাড়তে থাকে? নাকি ত্রিশের পর এ বিষয়ে চিন্তিত হওয়া উচিত?
দেবি শেঠি: না, কোলেস্টেরলের মাত্রা ছোটবেলা থেকেই ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে।
প্রশ্ন: অনিয়মিত খাদ্যাভাস কিভাবে হৃদযন্ত্রের ওপর প্রভাব ফেলে?
দেবি শেঠি: অনিয়মিত খাদ্যাভাস মানুষকে জাঙ্ক ফুডের দিকে ঠেলে দেয়। আর তখনই হজমের জন্য ব্যবহৃত এনজাইমগুলো দ্বিধায় পড়ে যায়।
প্রশ্ন: ওষুধ ছাড়া কিভাবে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করা যায়?
দেবি শেঠি: নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভাস, হাঁটাহাঁটি এবং আখরোট খাওয়ার মাধ্যমে।
প্রশ্ন: হৃদযন্ত্রের জন্য সবচেয়ে ভালো এবং সবচেয়ে খারাপ খাবার কোনটি?
দেবি শেঠি: ফল এবং সবজি সবচেয়ে ভাল খাবার। আর সবচেয়ে খারাপ তৈলাক্ত খাবার।
প্রশ্ন: কোন তেল ভালো? সূর্যমুখী নাকি জলপাই?
দেবি শেঠি: যেকোনো তেলই খারাপ।
প্রশ্ন: নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য কি নির্দিষ্ট কোনো পরীক্ষা আছে?
দেবি শেঠি: নিয়মিত রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে সুগার এবং কোলেস্টেরলের স্বাভাবিক মাত্রা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে। তাছাড়া রক্তচাপ পরিমাপও জরুরি।
প্রশ্ন: হার্ট অ্যাটাক হলে প্রাথমিকভাবে কি কি পদক্ষেপ নিতে হবে?
দেবি শেঠি: রোগীকে প্রথমে শুইয়ে দিতে হবে। এরপর জিহ্বার নিচে একটি এ্যাসপিরিন ট্যাবলেট রাখতে হবে। যদি পাওয়া যায় তবে এ্যাসপিরিনের পাশাপাশি একটি সরবিট্রেট ট্যাবলেটও রাখতে হবে। এরপর দ্রুত হাসপাতালে নেবার ব্যবস্থা করতে হবে। কেননা প্রথম এক ঘণ্টার মধ্যেই সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়।
প্রশ্ন: হৃদরোগজনিত ব্যথা এবং গ্যাস্ট্রিকের ব্যথার মধ্যে পার্থক্য করা যায় কিভাবে?
দেবি শেঠি: ইসিজি ছাড়া এটা সত্যিই খুব কঠিন।
প্রশ্ন: যুবকদের মধ্যে হৃদযন্ত্র সংক্রান্ত সমস্যার আধিক্যের কারণ কি?
দেবি শেঠি: একটানা দীর্ঘ সময় বসে থাকা, ধূমপান এবং জাঙ্ক ফুড। তাছাড়া ব্যায়াম না করাও একটি প্রধান কারণ। কিছু কিছু দেশের মানুষের জেনেটিক কারণেই ইউরোপিয়ান এবং আমেরিকানদের চেয়ে তিন গুণ বেশি হৃদরোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
প্রশ্ন: রক্তচাপের স্বাভাবিক মাত্রা (১২০/৮০) না থাকলেও কি কেউ পুরোপুরি সুস্থ থাকতে পারে?
দেবি শেঠি: হ্যাঁ।
প্রশ্ন: নিকট আত্মীয়ের মধ্যে বিয়ে করলে সন্তানের হৃদরোগ হতে পারে- এটা কি সত্য?
দেবি শেঠি: হ্যাঁ। নিকট আত্মীয়ের মধ্যে বিয়ে জন্মগত অস্বাভাবিকতার দিকে ঠেলে দেয়।
প্রশ্ন: বেশিরভাগ মানুষ অনিয়ন্ত্রিত রুটিন অনুসরণ করে। মাঝে মাঝে মানুষকে অনেক রাত পর্যন্ত অফিসে থাকতে হয়। এতে কি হৃদযন্ত্রের ক্ষতি হয়? যদি হয় তবে এক্ষেত্রে কি পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে?
দেবি শেঠি: তরুণ বয়সে প্রকৃতি মানুষকে এ ধরনের অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে সুরক্ষা দেয়। কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে এসব বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
প্রশ্ন: অ্যান্টি-হাইপারটেনসিভ ওষুধ গ্রহণ করলে অন্য কোন জটিলতা তৈরি হয়?
দেবি শেঠি: হ্যাঁ, বেশিরভাগ ওষুধেরই কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে। কিন্তু আধুনিক অ্যান্টি-হাইপারটেনসিভ ওষুধগুলো অনেক নিরাপদ।
প্রশ্ন: অতিরিক্ত চা বা কফি খেলে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে?
দেবি শেঠি: না।
প্রশ্ন: অ্যাজমা রোগীদের কি হৃদরোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশি?
দেবি শেঠি: না।
প্রশ্ন: জাঙ্ক ফুডকে কিভাবে সংজ্ঞায়িত করবেন?
দেবি শেঠি: যেকোনো ধরনের ফ্রাইড ফুড যেমন কেন্টাকি, ম্যাকডোনাল্ডস, সমুচা। এমনকি মাসালা দোসাও জাঙ্ক ফুড।
প্রশ্ন: আপনার মতে ভারতীয়দের হৃদরোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা তিন গুণ বেশি। এর কারণ কি?
দেবি শেঠি: পৃথিবীর প্রতিটি জাতিরই কিছু নির্দিষ্ট রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে। দুঃখজনক হলেও সত্য, জাতি হিসেবে ভারতীয়দের সবচেয়ে ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশি।
প্রশ্ন: কলা খেলে উচ্চ রক্তচাপ কমে?
দেবি শেঠি: না।
প্রশ্ন: হার্ট অ্যাটাক হলে কেউ কি নিজে নিজে প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে পারে?
দেবি শেঠি: অবশ্যই। তাকে প্রথমেই শুতে হবে এবং একটি এ্যাসপিরিন ট্যাবলেট জিহবার নিচে রাখতে হবে। এরপর দ্রুত আশপাশের কাউকে বলতে হবে যেন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আমি মনে করি অ্যাম্বুলেন্সের জন্য অপেক্ষা করা ঠিক নয়। কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অ্যাম্বুলেন্স যথাসময়ে হাজির হয় না।
প্রশ্ন: রক্তে শ্বেতকণিকা এবং হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেলে কি হৃদরোগ হতে পারে?
দেবি শেঠি: না। কিন্তু নিয়মিত ব্যায়াম করার জন্য হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ স্বাভাবিক থাকা জরুরি।
প্রশ্ন: আমাদের ব্যস্ত জীবনযাত্রার কারণে অনেক সময় ব্যায়াম করা সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে ঘরের স্বাভাবিক কাজের সময় হাঁটাহাঁটি করা অথবা সিঁড়ি বেয়ে ওঠানামা করা কি ব্যায়ামের বিকল্প হতে পারে?
দেবি শেঠি: অবশ্যই। একটানা আধা ঘণ্টার বেশি বসে থাকার অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। এমনকি এক চেয়ার থেকে উঠে অন্য চেয়ারে যেয়ে বসাও শরীরের জন্য অনেকটা সহায়ক।
প্রশ্ন: হৃদরোগ এবং রক্তে সুগারের পরিমাণের সাথে কি কোনো সম্পর্ক আছে?
দেবি শেঠি: বেশ গভীর সম্পর্ক আছে। ডায়াবেটিস রোগীদের হৃদরোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা অনেক।
প্রশ্ন: হৃদযন্ত্রের অস্ত্রোপচারের পর কি কি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে?
দেবি শেঠি: পরিমিত খাদ্যাভাস, ব্যায়াম, নিয়মিত ওষুধ খাওয়া, কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা। পাশাপাশি রক্তচাপ এবং ওজনও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
প্রশ্ন: যারা রাতের শিফটে কাজ করেন তাদের কি হৃদরোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশি?
দেবি শেঠি: না।
প্রশ্ন: আধুনিক অ্যান্টি-হাইপারটেনসিভ ওষুধগু কোনগুলো?
দেবি শেঠি: অনেক ওষুধই আছে। এক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া জরুরি। তবে আমার পরামর্শ হলো, ওষুধ এড়িয়ে স্বাভাবিক পদ্ধতিতে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা। আর সেজন্য নিয়মিত হাঁটা, ওজন কমে এমন খাবার খাওয়া এবং জীবনযাত্রার প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন জরুরি।
প্রশ্ন: ডিসপিরিন বা এই ধরনের মাথাব্যথা উপশমকারী ট্যাবলেট কি হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়ায়?
দেবি শেঠি: না।
প্রশ্ন: মেয়েদের চেয়ে ছেলেরা কেন হৃদরোগে বেশি আক্রান্ত হয়?
দেবি শেঠি: প্রকৃতি মেয়েদেরকে ৪৫ বছর পর্যন্ত সুরক্ষা দেয়।
প্রশ্ন: হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখার উপায় কি?
দেবি শেঠি: স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। জাঙ্ক ফুড ও ধূমপান পরিহার করতে হবে। প্রতিদিন ব্যায়াম করতে হবে। আর বয়স ত্রিশ পার হলে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে। অন্তত প্রতি ছয় মাসে একবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতেই হবে।
(ফেসবুক বন্ধুদের জন্যে বিখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা: দেবি শেঠি’র এই পরামর্শ আশা করি সকলের কাছে অত্যন্ত মূল্যবান মনে হবে। উপকৃতও হবেন অনেকেই। এই কথপোকথন কেমন লাগল জানাতে ভুলবেন না আশা করি!